Header Ads

চাটখিলের যুবলীগ কর্মী বাচ্চু দাউদকান্দিতে র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ, ১৫ দিনেও সন্ধান মিলেনি

আনোয়ারুল হায়দার, চাটখিল (নোয়াখালী): চাটখিল উপজেলার রাম নারায়নপুর
ইউনিয়ন যুবলীগ কর্মী মোসলেহ উদ্দিন বাচ্চু (৩৮) অপহরণ হওয়ার ১৫ দিনেরও
বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও গতকাল সোমবার পর্যন্ত তার সন্ধান মেলে নি। এতে করে
অপহৃত বাচ্চুর পরিবারে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা ও আহাজারি বিরাজ করছে। গত ১৯
এপ্রিল শনিবার গভীর রাতে প্রাইভেট গাড়ি যোগে সস্ত্রীক ঢাকা যাওয়ার পথে
কুমিল্লার দাউদকান্দি ব্রীজের পশ্চিম পাড়ে র‌্যাব পরিচয়দানকারী ৮-১০জন
লোকের হাতে তিনি অপহৃত হয়েছিলেন। র‌্যাব ১১ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার
করেছেন।
অপহৃত মোসলেহ উদ্দিন বাচ্চুর স্ত্রী মুন্নি বেগম জানান তার (মুন্নি)
চিকিৎসার জন্য গত ১৯ এপ্রিল রাত ১২ টার সময় একটি প্রাইভেট গাড়ি যোগে
বাচ্চু ও তার স্ত্রী ঢাকার উদ্দেশ্যে তার গ্রামের বাড়ি চাটখিল উপজেলার
রাম নারায়নপুর ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকা থেকে যাত্রা শুরু করেন। পথিমধ্যে
তারা কুমিল্লার একটি হোটেলে যাত্রা বিরতি ও রাতের খাবার খেয়ে পুনরায়
ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। রাত ৩টার সময় তাদের বহনকারি গাড়ি মেঘনা-গোমতি
সেতু (দাউদকান্দি ব্রীজ) পেরিয়ে পশ্চিম পাড়ে পৌঁছামাত্র র‌্যাবের পোশাক
পরিহিত ও র‌্যাব পরিচয়দানকারী ০৮-১০জনের একদল সশস্ত্র লোক সিগন্যাল দিয়ে
গাড়ি গতিরোধ করে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে ২-৩ জন লোক গাড়িতে ঢুকে বাচ্চুর
নাম ধরে খুজঁতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা বাচ্চুকে তার নাম জিজ্ঞেস করলে
তিনি তার নাম মোসলেহ উদ্দিন বলার সাথে সাথে বাচ্চু, তার স্ত্রী, গাড়ি
চালক মনির ও হেলপার কবির হোসেনের চোখ, মুখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
এই ঘটনার ১ ঘন্টার পর বাচ্চুকে রেখে তার স্ত্রী, গাড়ি চালক ও হেলপারকে
চোখ, মুখ বেঁধে ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ার সিলেট মহাসড়কের মাথায় ছেড়ে দিয়ে
নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে চলে আসার নির্দেশ দেয়। ভয়ে ও আতঙ্কে স্বামীকে রেখেই
মুন্নি গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হন। এরপর স্বামীর আসার অপেক্ষায়
পথ চেয়ে বসে থাকলেও এখন পর্যন্ত তার কোন সন্ধান মেলে নি। মুন্নির প্রশ্ন
আমার স্বামী কি জীবিত নাকি মৃত অবস্থায় আছে? এই ঘটনার পর থানা পুলিশ সহ
বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর কাছে বাচ্চুর পরিবারের পক্ষ থেকে
ধরনা দিয়েও তার কোন সন্ধান পাননি। গত ১৫ দিনেও অপহৃত বাচ্চুর সন্ধান না
মেলায় তার স্বজনেরা চরম আতঙ্কে আছেন।
নিখোঁজ বাচ্চুর স্ত্রী তার স্বামীকে জীবিত না হলেও মৃত দেহটা ফেরত চান।
বাচ্চুর বৃদ্ধা মা নাছিমা বেগম (৬৫) বাবা নুরুজ্জামান (৭৫)কান্নাজড়িত
কন্ঠে বলেন, আমাদের ছেলেকে যারাই ধরে নিয়ে থাকুক তাকে অক্ষত অবস্থায়
ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। বাচ্চু ছিল তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড়।
এ ব্যাপারে র‌্যাব ১১ কুমিল্লা ক্যাম্পের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজর
সাহেদ এর সঙ্গে কথা বললে, তিনি জানান এই ঘটনার সঙ্গে র‌্যাব ১১ এর কোন
সংশ্লিষ্টতা নেই। চাটখিল থানার ওসি মো: আমিনুল ইসলাম বলেন, যেহেতু ঘটনা
ঘটেছে কুমিল্লায় সেহেতু এ ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না। তবে বাচ্চুর
বিরুদ্ধে চাটখিল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

No comments