Header Ads

চাটখিলে শহীদ মুনীর চৌধুরীর নামে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি ও বন্ধ হয়ে গেছে

এ এন মাহমুদ চৌধুরী জুয়েল, চাটখিল (নোয়াখালী)ঃ
    শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর স্মৃতি রক্ষার্থে তাঁর গ্রামের বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নানা প্রতিকুলতায় দিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে  মুনীর চৌধুরীর  পৈত্রিক এলাকায় তাঁর স্মৃতি ধরে রাখার আর কোন  উপায় রইলো না। বিদ্যালয়ের জমি নিয়ে মামলাই বিদ্যালয়টি টিকে থাকার পথে মূল প্রতিবন্ধকতা বলে সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে।
    মুনীর চৌধুরীর গ্রামের বাড়ী নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার শাহাপুর ইউনিয়নের গোপাইর বাগে গ্রামে। তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি সম্প্রতি পরিদর্শনে গেলে কথা হয় তাঁর চাচাত ভাই শহীদ উল্যা, ভাতিজা স্থানীয় সাহাপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম হায়দার কাজল, আবু ছায়েদ, ও সোমপাড়া কলেজের ভারপাপ্ত অধ্যক্ষ মহি উদ্দিন আহমেদ, প্রভাষক নাসির উদ্দিন প্রমূখের সঙ্গে। তাঁরা জানান শহীদ মুনীর চৌধুরীর স্মৃতি ধরে রাখতে গ্রামবাসী ১৯৭২ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু গত ৪০ বছরেও বিদ্যালয়টির অবকাঠামোগত কোন উন্নয়ন ও  সরকারি স্বীকৃতিতো পায়নি বরং এক মামলা বাজের খপ্পরে পড়ে তা বিলুপ্তির পথে। দেখা যায় বিদ্যালয়ের চিহ্ন হিসাবে গত কয়েক বছর ধরে যে কয়েকটি খূঁটি দাঁড়ানো ছিল তাও লুটপাট হয়ে যায়, রয়েছে এখন শুধু খোলা ভিটা। চেয়ারম্যান গোলাম হায়দার কাজল জানান, মুনীর চৌধুরী শহীদ হওয়ার পর তার বাবা (কাজলের বাবা) সামছুদ্দিন চেয়ারম্যান ওরপে ইনশাল্লাহ চেয়ারম্যান তাদের বাড়ীর পাশে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। এর নাম দেওয়া হয় শহীদ চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিভিন্ন কারণে সেটি একাধিক বার স্থানান্তরিত হয়। পরে গ্রামের মরহুম সেকান্দার আলী মাস্টারের স্ত্রী করিমুন নেছা ৫৪ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নামে দান করেন এবং ওখানে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে। ১৯৮৮ সালের মাঠ জরিপে বিদ্যালয়ের নামে খতিয়ান ভূক্ত হয়।
    বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, প্রতিষ্ঠার পর এলাকার শিক্ষিত যুবকরা বিনা বেতনে প্রায় ২০/২৫ বছর খেটে ক্লান্ত হয়ে বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যায়। এ পর্যন্ত দুইবার ভবন নির্মানে সরকারি মঞ্জুরী পাওয়া গেলেও জমি নিয়ে মামলা থাকায় নির্মান কাজ হয়নি। জমি দাতা করিমুন নেছার জামাতা ও জমির ওয়ারিশ সূত্রে অংশীদার আনোয়ার হোসেন ইরান সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি করেছেন।
    প্রতিবেশী তপন মালাকার জানান, প্রায় ৭ বছর পূর্বে ঝড়ে বিদ্যালয়টি পড়ে গেলে এরপর তা আর গড়ে তোলা হয়নি। ভিটায় যে কয়টি কয়েকটি খুুঁটি দাড়িয়ে ছিল তাও লুটপাট হয়ে গেছে। তবে কিছু টিন ও ভাঙ্গা চুঁড়া আসবার পত্র তার বাড়িতে রয়েছে।
    চাটখিল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বর্তমানকে বলেন, বিদ্যালয়টি টেকানোর জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) (বদলী হয়ে যাওয়া) করমি গাজী ও হাসান আরিফ বেশ চেষ্টা তদবির করেন, কিন্তু মামলার কারণে এগোতে পারেনি। বর্তমান ইউ.এন.ও কাজী মো: চাহেল তস্তরী বলেন এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। এ দিকে মামলার বাদী আনোয়ার হোসেন ইরান এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বন্টননামা মামলা হওয়ায় এখানে ১৪৬ জন ওয়ারিশ রয়েছে। ওয়ারিশ বেশী হওয়ায় মামলা তোলা যাচ্ছে না। তিনি বলেন বন্টন মামলা নিষ্পত্তি হতে সময় বেশী লাগে, তবে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাপাক সেটা আমরা ও চাই।
    এ ব্যাপারে শহীদ মনির চৌধুরীর ভাতিজা ১নং শাহাপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম হায়দার কাজল বলেন বুদ্ধিজীবী শহীদ মনির চৌধুরীর স্মৃতি ধরে রাখার জন্য স্থানীয় এলাকার গন্যমান্যব্যক্তি বর্গের সঙ্গে বৈঠক করে বিদ্যালয়টি পূনঃপ্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

No comments